ডা. স্বপন কুমার জানা 

সংগঠক, সোসাইটি ফর সোসাল ফার্মাকোলজি, পশ্চিমবঙ্গ 

আমাদের  দেশে  চিকিৎসা  বরাবরই "পণ্য"। তবে ১৯৮৬ সাল থেকে সরকার "ক্রেতা সুরক্ষা আইন" করে  চিকিৎসা পরিষেবাকে আইনী ভাবে  "পণ্য" হিসেবে জনগণের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে  । ফলে চিকিৎসা পরিষেবা ক্ষেত্র চিকিৎসা বাজারে পরিণত হয়েছে । দেশের চিকিৎসা বাজার মূলত বেসরকারী । তবে সরকারী ক্ষেত্র থেকে চিকিৎসা বিনামূল্যের বলা হলেও রোগী ও জনসাধারণকে বিভিন্ন ভাবে গাঁটের কড়ি খরচ করতে হয় । এ ধরনের একটি ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে চিকিৎসকরা রোগীদের চিকিৎসার  জন্য প্রেসক্রিপশন প্রদান করেন ।

রোগীরা তাঁদের রোগের উপশম, সারানো বা প্রতিরোধের জন্য যে সমস্ত ওষুধ কেনেন তা চিকিৎসকের নির্দেশমত । রোগীরা নিজেদের ওষুধ নিজেরা  পছন্দ করতে পারেন না । সে দক্ষতা রোগীদের নেই । রোগীদের চিকিৎসকের উপর নির্ভর করতে হয় । চিকিৎসকরা রোগীদের হয়ে "ওষুধ পণ্য" নির্বাচন করে দেন । এর জন্য চিকিৎসকদের মানসিক শ্রম করতে হয় । জ্ঞানের প্রয়োগ ঘটাতে হয় ।

           প্রেসক্রিপশন হচ্ছে "পণ্য" - মানসিক শ্রমে উৎপাদিত 

রোগীদের জন্য প্রেসক্রিপশন চিকিৎসকদের মূলত মানসিক শ্রমের ফসল । ফলে উৎপাদনের নিয়ম অনুসারে তা "পণ্য" ।

          (ক) "প্রেসক্রিপশন পণ্য"  চিকিৎসকের নিজের ব্যবহারের জন্য নয় । এ পণ্য সৃষ্টি হয়েছে রোগীদের বিক্রির জন্য । বাজারের জন্য ।

          (খ) এ পণ্য আগে থেকে উৎপাদন করে জমিয়ে  রাখা যায় না । রোগীরা চিকিৎসকের পরামর্শের জন্য এলে তবেই "প্রেসক্রিপশন পণ্যের জন্ম বা উৎপাদন হবে ।

          (গ) "প্রেসক্রিপশন পণ্য" প্রতিটি রোগীর ক্ষেত্রে আলাদা । প্রেসক্রিপশনের  নির্দেশিত ওষুধ পণ্যও আলাদা । তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে গুণাবলী অভিন্ন ।

         (ঘ) ভারতের বর্তমান আর্থ সামাজিক ব্যবস্থায় অনেক চিকিৎসক জ্ঞানের ব্যক্তি মালিকানা হারিয়ে  "প্রযুক্তি শ্রমিকে" পরিণত হচ্ছেন । ফলে মালিকের মুনাফা অর্জনকারী  মনোভাবের প্রভাব প্রেসক্রিপশনে পড়ে ।  যেমন কর্পোরেট বা বড় প্রাইভেট হাসপাতালে । 

         (ঙ) একটি প্রেসক্রিপশনে চিকিৎসকের রোগ বিষয়ক শিক্ষামালা, ওষুধ নির্বাচন, প্রয়োগ দক্ষতা, সংস্কৃতি , ভাবমানস, রাজনৈতিক বিশ্বাস  ইত্যাদি আষ্টেপৃষ্ঠে লেগে রয়েছে । চিকিৎসকদের জ্ঞান চর্চা ও প্রয়োগের  মধ্য দিয়ে জন্ম নেয় প্রেসক্রিপশন । রোগীরা এই "প্রেসক্রিপশন পণ্য" কেনেন । রোগীরা প্রেসক্রিপশনের মালিকানা স্বত্ব পান । অর্থের বিনিময়ে এই প্রেসক্রিপশন রোগীরা কেনেন । রোগীদের রোগ-ব্যাধি অনুসারে  সমাজে বিভিন্ন মূল্যে বিভিন্ন প্রেসক্রিপশন বিক্রি হয় । প্রেসক্রিপশন করার পারিশ্রমিক হিসেবে চিকিৎসক যে ফিস নেন সেটাই "প্রেসক্রিপশন পণ্যের"  মূল্য । এরপর "প্রেসক্রিপশন পণ্যে"র ব্যবহার শুরু হয় ।

         (চ) "প্রেসক্রিপশন পণ্য"  অন্য পণ্যের সাথে বিনিময় করা যায় না ।  বা রোগী ক্রেতা   কাউকে বেচতে পারেন না ।  বা পণ্যের ভাগ দিতে পারেন না ।  তবে কেউ কেউ প্রেসক্রিপশনের শিক্ষামালা অন্যের উপর কাজে লাগাতে পারেন । বা শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে প্রয়োগ করতে পারেন ।

         (ছ) "প্রেসক্রিপশন পণ্য"  অন্য  পণ্যের  বেচা কেনার নির্দেশনা নিয়ে হাজির হয় । অন্য পণ্যের নির্বাচন ও বেচাকেনায় প্রভাব ফেলে । যেমন প্রেসক্রিপশনের নির্দেশিত  ওষুধ বিক্রি করেন ওষুধের দোকানদার বা ফার্মাসিস্ট । বর্তমানে প্রেসক্রিপশনে নির্দেশিত ওষুধ কেনার সময় রোগীর পছন্দ না দোকানদারের পছন্দ মত হবে , তা বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে । ওষুধের দাম,  কোম্পানি , ফর্মূলেসন, রোগীর বিশ্বাস ইত্যাদি বেচাকেনায় প্রভাব ফেলে ।

         প্রেসক্রিপশনের মেধাস্বত্ব থাকলে কি হতো, জানিনা 

প্রেসক্রিপশন যেহেতু চিকিৎসকের মানসিক শ্রম দ্বারা  উৎপাদিত পণ্য, সেহেতু পুঁজিবাদী নিয়মে  এর মেধাসত্ব থাকা দরকার । কিন্তু আমাদের দেশে প্রেসক্রিপশনের  মেধাস্বত্ব  নিয়ে আলোচনা শুনিনি ।  যদিও বিজ্ঞানের নিয়ম  ও নৈতিকতার প্রশ্নে জ্ঞান ও শিক্ষামালার কোনভাবেই ব্যক্তি মালিকানা হওয়া উচিত না । জ্ঞান ও শিক্ষামালা সব সময় সামাজিক সত্ত্বায় জারিত । চিকিৎসকের দেওয়া প্রেসক্রিপশন দেশের মেধাস্বত্ব আইন দ্বারা সুরক্ষিত নয় । এ ধরনের কোন ব্যবস্থাপনা আমাদের দেশে নেই । অন্য দেশে আছে কিনা আমাদের জানা নেই । 

প্রেসক্রিপশন পণ্য বিক্রি হয়ে যাওয়ার পর  যে কেউ নকল করতে পারে । যেমন প্রেসক্রিপশন প্যাডের সাইজ, ছাপানো তথ্য সমূহ, চিকিৎসার নীতিমালা,  প্রযুক্তি ও দক্ষতার প্রকাশ গুলো সহজেই অনেকে নকল করে কাজে লাগান । যেমন আমাদের দেশের  অপাসকরা-বেআইনী চিকিৎসকরা (আমরা গ্রামীণ চিকিৎসক বলি । সাধারণ মানুষ এঁদের হাতুড়ে বা কোয়াক বা ঝোলাছাপ নামে চেনেন- লেখক) বিশেষজ্ঞ বা অভিজ্ঞ চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন শিখে নিয়ে রোগীদের উপর প্রয়োগ করেন । অনেক রোগী বা রোগীর আত্মীয় প্রেসক্রিপশন দেখে নিজেদের সমস্যায় বা অসুস্থতায়  কাজে লাগান । নতুন করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হয় না বা মতামত কিনতে হয় না ।

        চিকিৎসা পণ্যের গুণাগুণ যাচাই হোক প্রেসক্রিপশনে 

 চিকিৎসকদের বিক্রি করে দেওয়া "প্রেসক্রিপশন পণ্যের" গুণাগুণ নিয়ে সমাজে যখন ভালো খারাপ আলোচনা হয়, জনগণকে সচেতন করা হয় , দাম নিয়ে মানুষ প্রশ্ন তোলেন , তখন বেশ কিছু চিকিৎসক বিভিন্ন নৈতিক ও আইনী প্রশ্ন করে বসেন । 

প্রেসক্রিপশনে  চিকিৎসকের  অবৈজ্ঞানিক ও অযৌক্তিক চিকিৎসা প্রতিফলিত  হলে নাকি ডাক্তারের নাম প্রকাশ করা যাবে না । অনেক চিকিৎসক রোগীদের ভয় দেখিয়ে বলেন "মানহানির মামলা করবেন"।  কিন্তু বিক্রির রশিদ দিয়ে "প্রেসক্রিপশন পণ্য"  বিক্রি করে  বিক্রেতা কখনোই অন্যায় ভাবে ক্রেতাকে  অভিযুক্ত করতে পারেন না । বরং ক্রেতাই বিক্রেতার অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে পারেন ।

 "প্রেসক্রিপশন পণ্যের" ক্রেতা রোগীরা যখন পণ্যের ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তখন চিকিৎসকরা বিক্রি বন্ধ করার আওয়াজ তোলেন । "প্রেসক্রিপশন পণ্য"  উৎপাদনের একমাত্র  মালিক বলে দাবী করেন । একচেটিয়া মালিকানা ভেবে নেন ।  চিকিৎসা বাজারের এই ধরণের বিক্রেতা চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে রোগী ক্রেতারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন । বা বিরক্ত হোন । অশান্তি হয় ।

        প্রেসক্রিপশন আইনী দলিল রোগীরা কেনেন নগদ মূল্যে 

দেশের ক্রেতা সুরক্ষা আইন-১৯৮৬ চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশনকে সহজাত ভাবে আইনী দলিল হিসেবে চিহ্নিত করেছে । চিকিৎসক বা রোগীদের ইচ্ছানিরপেক্ষ ভাবে প্রেসক্রিপশন আইনি তথ্য । প্রেসক্রিপশন পণ্য বিক্রি হয়ে যাওয়ার পর এবং  রোগীরা মালিক হয়ে যাওয়ার পর দেশের আইন প্রতিষ্ঠানের কাছে চিকিৎসকের দায়বদ্ধতা রয়েছে । কোন আইনি সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকদের আইন প্রতিষ্ঠানের কাছে গিয়ে সাক্ষী দিতে হয় । অনেক চিকিৎসক তাঁদের প্রেসক্রিপশনে ছেপে রাখেন "Not for Medico-legal Purpose"। সচেতন বা অসচেতন ভাবে  এ লেখা চিকিৎসকের অন্যায় বা প্রতারণা । এতে রোগী-চিকিৎসক সম্পর্ক বিরুদ্ধতার মুখোমুখি হয় ।

আমাদের সংগ্রহে এমন সব প্রেসক্রিপশন রয়েছে যেখানে প্রেসক্রিপশন  বিক্রি করা সত্বেও তাতে  লেখা রয়েছে "Complementary" । কখনো খুব ছোট্ট করে , কখনো হাতে লিখে বা কখনো স্ট্যাম্প মেরে  প্রেসক্রিপশনে রাখা হয়েছে । সাধারণ রোগীরা এ সব বুঝতে পারেন না , কিন্তু এর পেছনে লুকিয়ে রয়েছে চিকিৎসকের নিচতম আত্মস্বার্থ ।  রোগীরা "Complementary"র অর্থ জানতে পারলে  রোগী চিকিৎসক সম্পর্কে তা প্রভাব ফেলবেই ।

         "প্রেসক্রিপশন পণ্য" উৎপাদনে ভারত   রাষ্ট্রের  ভূমিকা 

প্রেসক্রিপশন চিকিৎসকদের মানসিক শ্রমের ফসল হলেও  চিকিৎসকরা  নিজেদের  খেয়াল খুশিমত উৎপাদন করতে  পারেন না । প্রেসক্রিপশন লেখার ক্ষেত্রে  রাষ্ট্রের নিয়ম কানুন ও নৈতিক নির্দেশনা চিকিৎসকদের মেনে চলতে হয় । 

      (১) যেমন প্রেসক্রিপশন প্যাডে রেজিস্ট্রেশন নম্বর, পরিষেবার সময় ও  যথাযথ ঠিকানা ছাপা থাকতে হবে ।

     (২) ডিগ্রি গুলো সরকারী মেডিকেল কাউন্সিলের অনুমোদিত হতে হবে । 

     (৩) ওষুধের নাম জেনেরিক বা আন্তর্জাতিক অব্যবসায়িক নামে লিখতে হবে ।

     (৪) নির্দিষ্ট রোগের যুক্তিপূর্ণ  চিকিৎসা ও ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে  ।  

     (৫) হাতের লেখা স্পষ্ট হতে হবে ।

কখনো কখনো  রাষ্ট্র পরিচালকরা নিজেদের বা নিজ শ্রেণীর স্বার্থে  চিকিৎসকদের বাধ্য  করে প্রেসক্রিপশনের তথ্য বদলাতে । যেমন কোন মারাত্মক রোগের প্রকোপ দেখা দিলে , মৃত্যুহার বা রোগীর সংখ্যা কমিয়ে দেখানোর জন্য প্রেসক্রিপশনে রোগটি সম্পর্কে  তথ্য বিকৃতির চাপ সৃষ্টি করা হয়  । 

এ ছাড়া রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন কার্যকলাপ প্রেসক্রিপশনে  প্রভাব ফেলে । দেখেছি,  ২০০৭ সালে নন্দীগ্রামের কৃষক  আন্দোলনে পুলিশের গুলি চালানোর  ঘটনা সরকার আড়াল করার জন্য চিকিৎসকদের বাধ্য  করেছিলো , "বুলেট ইনজুরি" বদলে শুধু "ইনজুরি" লিখতে ।

আমাদের  সংগ্রহে আছে কাস্তে-হাতুড়ি-তারা আঁকা প্রেসক্রিপশন ।   সিপিআই(এম)  রাজনৈতিক দল এই প্রতীক  চিহ্নটি  ব্যবহার করেন । এখানে  সিপিআই(এম) কে ভোট দেওয়ার আবেদন রাখা হয়েছে । চিকিৎসকের রাজনৈতিক মতামত দিয়ে রোগীদের প্রভাবিত করার তথ্য হিসেবে এই প্রেসক্রিপশনকে গণ্য করা যেতে পারে ।

      প্রেসক্রিপশনে  ফুটে ওঠে চিকিৎসকদের ভাবমানস 

অনেক প্রেসক্রিপশনে চিকিৎসকদের কাজের দৃষ্টিকোণ বা দার্শনিক ভাবনা প্রতিফলিত হয় । চিকিৎসকের  ভাবনা ও কাজের চালিকা শক্তি ভাববাদী না বস্তুবাদী দৃষ্টিকোণ - তা বোঝা যায় । কাজের ক্ষেত্রে এ ধরনের  মনোভাব যে প্রভাব ফেলে অনেক চিকিৎসক আবার স্বীকার করেন না ।  বেশীর  ভাগ চিকিৎসক তাঁদের কাজের ক্ষেত্রে, দার্শনিক চিন্তায় ভাববাদী ।  অথচ রোগী দেখায়  বিজ্ঞান প্রয়োগকারী । অজানা শক্তির আরাধনা , ঈশ্বর-আল্লা-কালী-খ্রীষ্টে বিশ্বাস ইত্যাদি প্রেসক্রিপশনে ফুটে উঠতে দেখা যায় । 

আমাদের সংগ্রহে অধিবিদ্যায় বিশ্বাসী চিকিৎসকদের অনেক  প্রেসক্রিপশন রয়েছে । হনুমান চালিসার পরামর্শ ,জয় ভেলানঙ্কাননি ,  ওঁ , মা সারদা , বিবেকানন্দের উদ্ধৃতি, জয় কালী , ওঁম ব্রহ্মা ইত্যাদি প্রেসক্রিপশন  আমাদের সংগ্রহে আছে ।  এই লেখা ও  চিহ্ন গুলো চিকিৎসকদের  ভাববাদী দৃষ্টিকোণ কেই প্রমাণিত করে । এঁদের অনেকের গলায় কবচ, তুলসীর মালা, আঙুলে রত্নখচিত  আংটি, হাতে তাগা বা গাছের শেকড় ইত্যাদি রয়েছে ।  যা  প্রেসক্রিপশনে প্রতিফলিত হয় ।  এঁদের রোগী দেখার চেম্বারে গণেশ পূজো হয় ।  

 তাছাড়া ওই সব বিষয় অনেক রোগীদের   মনোজগতে  চিকিৎসকের প্রতি বিরুদ্ধতার জন্ম দেয় । ওই ধরনের  চিকিৎসকের কাছ থেকে  রোগীরা প্রেসক্রিপশন কিনেও ব্যবহার করেন না । 

একজন  চিকিৎসা  বিজ্ঞান প্রয়োগকারী হিসেবে ডাক্তারের  আচার-আচরণ রোগী-চিকিৎসক সম্পর্কেও  প্রভাব ফেলে । আমি দেখেছি, আংটি হাতে বা কপালে তিলোক কাটা চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন রোগীদের  ফেলে দিতে । 

 

লেখক সম্পর্কে

GRAPH_AVATAR_IMG
ডা. স্বপন কুমার জানাঅবসরপ্রাপ্ত প্রশিক্ষক, ওষুধ বিজ্ঞান বিভাগ, কলকাতা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ, ও উপদেষ্টা, সোসাইটি ফর সোশ্যাল ফার্মাকোলজি - পশ্চিমবঙ্গ পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ