কোভিড পরিস্থিতি এবং তার সঙ্গে সঙ্গে লকডাউন থেকে শুরু করে এক সার্বিক অচলাবস্থা এল এমন একটা সময় যখন ২০০৮-০৯ সালের গ্রেট ডিপ্রেসনের থেকেও খারাপ অবস্থায় চলে গিয়েছিল অর্থনীতি। অর্থনৈতিক সংকোচন ছিল মাত্রাছাড়া। আসলে ২০০৮ সালের মহামন্দার পর থেকেই বিশ্ব অর্থনীতি একটা ভয়ঙ্কর স্থবিরতার মধ্যে চলে গিয়েছিল।
২০২০-এর অনেক আগে থেকেই বিশ্ব পুঁজিবাদী অর্থনীতির গতি দ্রুত হারে নিচের দিকে নামছিল। সমস্ত বৃহৎ অর্থনীতির জিডিপি বৃদ্ধির হার ২ শতাংশের নিচে নেমে এসেছিল। বিশ্বময় কর্পোরেট মুনাফার পরিমাণ স্থবির হয়ে পড়েছিল। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য অনেকটা কমে গিয়েছিল, খানিকটা মার্কিন- চীন বাণিজ্য যুদ্ধের সৌজন্যে।
২০২০-এর প্রথম ত্রৈমাসিকে (জানুয়ারি-মার্চ; অর্থাৎ মহামারী/লকডাউনের ঠিক আগে): মার্কিন অর্থনীতি ৪.৮%, জাপান ৭.১% এবং ইইউ ৩.৫% সংকুচিত হয়েছিল। শুধু তাই নয়, সারা বিশ্বে দ্রব্যমূল্য ফেব্রুয়ারী মাসের শেষের দিকে কমতে শুরু করে। মার্কিন তেলের দাম ফেব্রুয়ারির শেষার্ধে দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে অর্ধেক মূল্য হারিয়েছে যা ব্যারেল প্রতি ২৪.৫ ডলারে নেমে এসেছে, যা ২০০৩ সালের পর সর্বনিম্ন। এর অন্যতম কারন সম্ভবত রাশিয়ার সঙ্গে মার্কিনদের বানিজ্য যুদ্ধ। আমরা দেখেছি পুঁজিবাদী অর্থনীতিতে এই সঙ্কট ঘুরে ঘুরে আসে আর তখন কোরামিন দিতে শোষণের নতুন নতুন পন্থা বার করে তারা। ১৯৯০-৯১ এর সঙ্কট চলছিল ১৯৯৪ পর্যন্ত যখন কেইনসিয়ান অর্থনীতি ভেঙ্গে পড়ল, নয়া উদারনীতিবাদী অর্থনীতির সূচনা এই সময় থেকেই। এর পর ২০০৮-এর মন্দা। ২০১০ থেকে ২০১৪ –এর মধ্যে বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশ দেখা যাচ্ছে জাতীয় ঋন শোধ করতে পারছে না। পশ্চিমী এবং মার্কিন অর্থনীতি স্থবিরতার মধ্যে পড়েছে যেখানে চিনা অর্থনীতি কিন্তু উঠতির দিকে। বিশ্ব জিডিপির শতাংশ হিসাবে জিডিপি (ক্রয়ক্ষমতার নিরিখে) বৃদ্ধিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৯৮১ সালের ২২% থেকে ২০২০ সালে ১৫% এ নেমে এসেছে, তুলনায় চীনের ১৯৮১ সালের ১.৭% থেকে ২০২০ সালে বেড়ে ১৯.৪% হয়েছে।
২০০৮ সালের মহামন্দা থেকে বাঁচার জন্য গাদা গাদা নোট ছাপিয়ে কোয়ান্টিটিভ ইজিং করে সাময়িকভাবে ভেসে থাকা গেলেও সঙ্কট থেকে বেরোতে পারছিল না পুঁজিবাদ। সঙ্কট থেকে বেরোতে তাই গোটা বিশ্বব্যবস্থাটাকেই নতুন করে ঢেলে সাজিয়ে নেওয়ার প্রয়োজন ছিল। আর সেটাই হয়তো কোভিড/ লকডাউন ইত্যাদির প্রকৃত লক্ষ্য।
কারণ মুনাফা বাড়ানোর একটাই ফর্মুলা রয়েছে। সেটা হল শ্রমের খরচ সবচেয়ে কমিয়ে ফেলা। দুটো পদ্ধতি নেওয়া যেতে পারতো এটা করার জন্য। এক, অর্থনীতিকে ব্যাপকভাবে ডিজিটালাইজেশন করে ফেলা যেত। আর দুই, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আর রোবটকে আরও বেশী করে সামনে নিয়ে আসা। এর মধ্যে দিয়ে মানবিক শ্রমকে ছাঁটাই করা। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যেতে পারে ২০১৬ সালে ক্লাউস সোয়াব (যিনি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের প্রধান) “চতুর্থ শিল্প বিপ্লব” নামে বইতে লিখছেন যে আমরা একটি প্রযুক্তিগত বিপ্লবের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছি যা মৌলিকভাবে আমাদের জীবনযাপন, কাজ করার এবং একে অপরের সাথে সম্পর্কিত জীবনযাপনে ব্যপক পরিবর্তন আনবে (ঠিক যেরকম তারা মহামারী এবং লকডাউনের মধ্যে দিয়ে চেষ্টা করছে যদিও এটি ২০১৬ সালে লেখা হয়েছিল) এর ব্যাপকতা, পরিধি, এবং জটিলতার নিরিখে, মানবজাতি এর আগে যা যা প্রত্যক্ষ করেছে তার থেকে এটা সম্পূর্ণ আলাদা। তিনি বলছেন, চতুর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভোলুশনের কথা। যার ভিত্তি হবে চার প্রযুক্তিগত উন্নতি। হাই স্পিড মোবাইল ইন্টারনেট, এআই এবং অটোমেশন, বড় বড় ডাটা অ্যানালিটিকসের ব্যবহার এবং ক্লাউড টেকনোলজি। বিশ্বের শ্রমশক্তির উপর তাঁর মতে সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়বে এআই এবং অটোমেশনের।
প্রথমত অটোমেশন এখন সর্ব ক্ষেত্রে গেঁড়ে চসছে, প্রসঙ্গত রিলায়েন্স ইতিমধ্যে অ্যাডভার্ব টেকের (যারা রোবট বানায়) ৫৪% শেয়ার কিনেছে । নয়ডাতে তার একটা সেটআপ হচ্ছে, বছরে ৫০০০০ রোবট বানানোর জন্য। দ্বিতীয়ত, যেটুকু মানব শ্রম দরকার তাকে যতটা সম্ভব সস্তা করা, এটাও তাদের অন্যতম অ্যাজেন্ডা যা লাগু হচ্ছে সহজেই এই পরিস্থিতির সুযোগে। এই কোভিড পরিস্থিতি তে লোকের চাকরির অনিশ্চয়তা কে কাজে লাগিয়ে, সস্তায় শ্রম বিক্রিতে বাধ্য করা হচ্ছে। আর এর অভিঘাতে যাতে প্রতিরোধ সংগঠিত না হয় তার জন্য মানুষ কে নিয়ন্ত্রণ করা, ভয় দেখিয়ে, প্রচার যন্ত্র ব্যবহার করে, মানুষকে মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন করে প্রভৃতি। আবার এই ডিজিটালাইজেশন ই নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে সাহায্য করছে, চাষী বিহীন চাষ, শ্রমিক বিহীন উৎপাদন, শিক্ষক বিহীন পড়াশুনো বা অনলাইন পড়াশুনো - মানুষের মানবিক আদানপ্রদানের জায়গা গুলো বন্ধ করছে বা সংকুচিত করছে, সঙ্গে সংগঠিত হওয়ার জায়গা কেও বন্ধ করছে। আবার ডিজিটাল আইডি, অনলাইন লেনদেন এ বাধ্য করা, সিসিটিভি প্রভৃতি কম সংখক লোকের মাধ্যমে সবার ওপর নজরদারি করতে সাহায্য করছে। একটি জিনিস স্পষ্ট; এর প্রতিক্রিয়া অবশ্যই একীভূত এবং ব্যাপক হতে হবে, যাতে বিশ্ব রাজনীতির সমস্ত স্টেকহোল্ডার, সরকারী এবং বেসরকারী সেক্টর থেকে একাডেমিয়া এবং সুশীল সমাজ পর্যন্ত বিষয়টার সঙ্গে জড়িত থাকে। এটি প্রযুক্তির সংমিশ্রণ দ্বারা চিহ্নিত যেখানে ভৌত, ডিজিটাল এবং জৈবিক ক্ষেত্রগুলির মধ্যেকার সীমারেখাকে অস্পষ্ট করে দেয়। এমনকি জৈবিক ক্ষেত্রকেও? তাহলে তারা কি ডিজিটাইজেশন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ইত্যাদি প্রযুক্তি ব্যবহার করে মানুষকে ডিফ্যাক্টো রোবটে পরিণত করতে চায়?
এদিকে বাজার ইতিমধ্যেই সীমিত, একদিকে সস্তা শ্রমের কল্যাণে আর অন্যদিকে চীন ব্যাপকভাবে বিশ্ব বাজার দখল করে নেবার ফলে। পশ্চিমী অর্থনীতি বাজার এবং সস্তা শ্রমের জন্য এখনও পর্যন্ত চীনের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু সেটাও স্যাচুরেটেড হয়ে এসেছে। আর চীনও এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে পশ্চিমকে আরও কোণের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
কোভিড পরিস্থিতির সুযোগে বিশ্বজুড়ে প্রবল ডিজিটালাইজেশন আমরা দেখতে পাচ্ছি। ওয়ার্ক ফ্রম হোম, ইন্টারনেট মাধ্যমে শিক্ষা, অনলাইনে খুচরো পণ্যের বিক্রি প্রবলভাবে বেড়ে যাওয়া, ইন্টারনেটে জুয়া খেলা, নেট মাধ্যমে এন্টারটেইনমেন্ট, এমনকি চিকিৎসা, মিটিং ইত্যদি সমস্তই নেট মাধ্যমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারতে অবশ্য প্রথমে ডিমনিটাইজেশন, তারপর জি.এস.টি. এবং অবশেষে লকডাউনের মধ্য দিয়ে ধাপে ধাপে এগিয়েছে এই ডিজিটাইজেশনের প্রক্রিয়া।
এই লকডাউন পরিস্থিতিতে শুধু ছোট আর মাঝারি ব্যবসাগুলোকে একের পর এক গিলে নেওয়া হয়েছে তাইই নয়, তাদের বাজারও দখল করে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খাদ্য এবং ওষুধের বাজারকে, যেটা সাধারণ মানুষ কিনতে বাধ্য, তাকেই মূল টার্গেট করা হয়েছে এক্ষেত্রে। তাই লক্ষ লক্ষ কোটি মানুষ কাজ হারালেও যাতে মুনাফার জন্য বাজার সচল থাকে, সেই ব্যবস্থা এইভাবে করার চেষ্টা করা হয়েছে। এই পরিকল্পনারই অংশ ভারতের তিনটি কৃষি আইন এবং অন্যান্য বিভিন্ন আইন যা লকডাউনকে কাজে লাগিয়ে ঘুরপথে পাশ করা হয়েছে। ক্লাউস সোয়াব সমস্ত উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাতিল করে দিয়ে ২০৩০-এর মধ্যে এক নতুন দুনিয়ার কথা বলেছেন। যেখানে, “you’ll own nothing, and you will be happy।” ২০৩০-এর মধ্যে সব উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাতিল করে সেই জায়গায় ইউনিভার্সাল বেসিক ইনকামের ধারণাকে আনা হবে। স্বাস্থ্যসাথী, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী মার্কা প্রকল্পগুলো শুধু মমতা নিচ্ছেন এমন নয়, কেন্দ্রে এবং বিভিন্ন রাজ্যে বা বৃহত্তর প্রেক্ষিতে ভাবতে গেলে গোটা বিশ্বে, এইসবই বৃহৎ অর্থে এই সর্বগ্রাসী পরিকল্পনার অংশ হিসাবেই গৃহীত হচ্ছে।
২০০৮-এর মন্দার পর অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট গ্রুপগুলির প্রবল উত্থান শুরু হয়। সমস্ত পলিসিকে ধনকুবেররা নন, এরাই নির্ধারণ করে থাকেন। সবচেয়ে বড় তিনটি এএমজি-ই বেশীরভাগটা নিয়ন্ত্রণ করে। এদের কথা কখনও সামনে আসতে দেওয়া হয় না। ব্ল্যাক রক, ভ্যানগার্ড আর স্টেট স্ট্রিট প্রায় ১১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিমাণ সম্পদ ম্যানেজ করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাবলিকলি লিস্টেড ফার্মের প্রায় ৪০ শতাংশের শেয়ার হোল্ডার এই তিনটি এএমজি। অ্যাপেল, মাইক্রোসফট, এক্সন মোবিল, জেনারেল ইলেকট্রিক আর কোকাকোলা সহ ৫০০ এস অ্যান্ড পি ফার্মের ৯০ শতাংশ শেয়ার হোল্ডার এই তিনটি এএমজি। বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ লগ্নি পুঁজি এদের নিয়ন্ত্রণে।
সমস্ত ফার্মা কোম্পানিগুলির মুখ্য শেয়ার হোল্ডার এই তিন দৈত্য। তারাই সব নিয়ন্ত্রণ করে। ভ্যানগার্ডের মুখ্য ইনভেস্টরেরা হল বিভিন্ন ডিজিটাল মোঘল (বৃহৎ কর্পোরেট ডিজিটাল হাঙরদের বোঝাতে এই শব্দবন্ধটি ব্যবহার করা হয়েছে)- রথস্চাইল্ড, রকফেলার, ওয়ারেন বাফেট, জর্জ সোরোস এবং ঐতিহ্যগত সম্পদশালী রক্তধারার আরও ১১ জন—Astor, Bundy, Collins, DuPont, Freeman, Kennedy, Li, Onassis and Reynold। WEF, UN, WTO, WHO, WB, IMF ইত্যাদি বিশ্ব সংস্থাগুলিকে এরা নিয়ন্ত্রণ করে। দানধ্যানের নামে অসংখ্য সংস্থাকে পরিচালনা করে এরা। এখানে বলে রাখি বিল গেটস্ এবং তাঁর দান ধ্যানের মাধ্যম বিখ্যাত ‘বিল অ্যান্ড মিলিন্দা গেটস্ ফাউন্ডেশনের’ কথা। ইউজেনিক্স এবং জনসংখ্যা হ্রাস করার তত্ত্বের প্রবক্তা বিল গেটস ২০১৮ সালের প্রথম দিকেই প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছিলেন যে বিশ্বব্যাপী মহামারী আসতে চলেছে এবং তা ৩০ মিলিয়ন মানুষকে নিশ্চিহ্ন করতে পারে। ২০১৯ সালের অক্টোবরে “করোনা ভাইরাস মহামারী অনুশীলন” নামে একটি ইভেন্ট আয়োজন করেন তিনি মানুষকে প্রস্তুত করার জন্য। প্রশ্ন জাগে তিনি এ তথ্য কোথা থেকে পেলেন? তাঁর আরও একটা পরিচয় তিনি বিশ্বের ভ্যাকসিন রাজা এবং ২০০০ সালেই ভ্যাকসিন জোট গাভি (GAVI) তৈরি করেন যা আমরা দেখছি টিকার দাম ঠিক করা ইত্যাদি ক্ষেত্রে এখনও উল্লেখযোগ্য ভুমিকা নিচ্ছে। তবে তিনি একাই নন একই নৌকার যাত্রী আরও অনেকে।
২০১০ সালে হ্যারী ভক্স, বিখ্যাত তদন্তকারী গবেষক রকফেলার ফাউন্ডেশনের একটি বিখ্যাত দলিলের উল্লেখ করেছেন, যেখানে এখন যা ঘটছে তা আক্ষরিক অর্থেই ভবিষ্যৎ বাণী করা হয়েছে। মহামারী-লকডাউন-অর্থনৈতিক পতন আর কর্তৃত্ববাদী নিয়ন্ত্রণ চাপিয়ে দেওয়া –এই গোটাটার বিবরণ রয়েছে সেখানে। নথির নাম “প্রযুক্তি এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়নের ভবিষ্যতের পরিস্থিতি”। লকডাউন নামে আজ যা হচ্ছে তারই নাম সেখানে লকস্টেপ। শুধু এই দলিলই নয় ২০১০-২০১১ সালে বেশ কিছু চলচ্চিত্র তৈরি হয় এই ভবিষ্যতের দুনিয়ার ছবিটা তুলে ধরে। ফলে বলা যায় এর মহড়া চলছিল অনেক দিন ধরেই।
এরা তৃতীয় বিশ্বকে তিনটি জিনিসের মধ্য দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করে। প্রথমত রাজনৈতিক নেতা এবং সরকারী আমলাদের নেটওয়ার্কের মাধ্যমে। এদের প্রতিনিধিরা ভারতের নীতি আয়োগ, আরবিআই গভর্নর এবং সরকারের মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ইত্যাদি পদ দখল করে নিয়ন্ত্রণ কায়েম করে আছে। দ্বিতীয়ত ভারতীয় কর্পোরেটদের সঙ্গে কোলাবরেশন এবং ইনভেস্টমেন্টের মাধ্যমে তাঁদেরকে নিয়ন্ত্রণ করার মধ্যে দিয়ে পরিস্থিতির উপর কর্তৃত্ব বজায় রাখে। এছাড়া বিভিন্ন ‘ফিলানথ্রপিক’ সংস্থার মধ্য দিয়েও এরা কর্তৃত্ব কায়েম করে থাকে, যেমন বিল এবং মিলিন্দা গেটস ফাউন্ডেশন, রকফেলার ফাউন্ডেশন, ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশন ইত্যাদি। এই নিয়ন্ত্রণকে কাজে লাগিয়ে এবং জনস্বাস্থ্যের অজুহাতকে সামনে রেখে একটা ন্যারেটিভ খাড়া করে সারা পৃথিবীকে এবং অবশ্যই ভারতে একটা সামগ্রিক জীবনযাত্রার ব্যাপক পরিবর্তন আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যাকে নাম দেওয়া হয়েছে ‘নিউ নর্মাল’। এটা আনতে চাইছে বিশ্বের তাঁবড় তাঁবড় কর্পোরেটরা বা বিশেষভাবে বলা যায় ডিজিটাল মোঘল এবং ফার্মা কোম্পানিগুলির একটা বড় লবি। পুঁজিবাদি অর্থনীতি যে একটা মারাত্মক সঙ্কটের মধ্যে ছিল মহামারী/লকডাউন আসার আগে থেকেই তা কাটিয়ে ওঠার এবং নতুন একটা বিশ্ব ব্যবস্থা (নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার) তৈরি করার মরিয়া প্রচেষ্টা দেখা যাচ্ছে এই কোভিড পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে অথবা এই পরিস্থিতিকে তৈরি করে।