আমরা এমন একটা সময়ের মধ্যে দিয়ে চলেছি, যেখানে কর্পোরেটদের একচেটিয়া লুঠ আরও ব্যাপক এবং সংগঠিত ভাবে চালানোর জন্য বিশ্বব্যাপী একটি প্রক্রিয়া চলছে। এর ফলে নতুন নতুন পদ্ধতির উদ্ভব হচ্ছে, নামে-বেনামে বহুজাতিক শিল্পনিগমগুলি কার্যত রাষ্ট্রকে পরিচালনা করছে। ‘উন্নত’ পশ্চিমী অর্থনীতিগুলো ভয়ানক মন্দার পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আজ। ২০১৯-এ এই মহামারী মহড়া শুরু হবার ঠিক আগে অর্থনীতি ছিল সঙ্কটজনক অবস্থায়। দুনিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী বিলিয়োনেয়ার ক্লাবের কাছে তখন মন্দা থেকে বাঁচার মরিয়া চেষ্টা ছাড়া আর গতি নেই। সেই মরিয়া চেষ্টারই অঙ্গ এই ‘মহামারী’। এই ‘কোভিড মহামারীর’ অজুহাতে আমাদের ঘাড়ে চেপে বসছে এমন এমন সব আইন কানুন যেখানে অধিকাংশ মানুষ তাদের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, স্বাধীনতা ও মর্যাদাসম্পন্ন জীবনধারণের মৌলিক অধিকার থেকে আরও বঞ্চিত হবে। শুধু তাই নয় হু মহামারী চুক্তি বা আগামী দিনে যে জনস্বাস্থ্য বিল আসতে চলেছে তার মধ্যে দিয়ে মানুষকে এক ধরনের স্বাস্থ্য নজরদারীর মধ্যে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে। একের পর এক সংক্রামক রোগের ভীতি তৈরি করা এবং জিন বদল করা ভ্যাকসিন নিতে বাধ্য করার ধারাবাহিক একটি প্রক্রিয়া জারি রয়েছে। জিন বদল করা ভ্যাকসিন ভবিষ্যতে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তৈরি করতেই পারে। এই ধরণের ভ্যাকসিন (বিশেষ করে জিন পরিবর্তিত) গেলানোর বিরোধিতা করতেই হবে। সংগঠিত এবং অসংগঠিত সরকারী-বেসরকারী উভয়ক্ষেত্রেই আমরা দেখেছি কিভাবে ভ্যাকসিন নেওয়াকে কাজে আসার শর্ত করা হয়েছে। আর এদিকে সুপ্রীম কোর্টে সরকার হলফনামা দিয়ে বলছে নাগরিকরা স্বেচ্ছায় ভ্যাকসিন নিয়েছে ফলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার দায়ে সরকারের নয়। এই দ্বিচারিতার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে হবে। বিশ্বকে কর্পোরেটদের স্বার্থে তাদের একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণে বিশ্বকে নিয়ে আসার এই প্রক্রিয়া চরম জনবিরোধী এবং দমনমূলক। এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো আজ সময়ের দাবী।
পৃষ্ঠা ৩
এই সময়ে দাঁড়িয়ে রাষ্ট্রের কাছে জনস্বাস্থ্য হয়ে উঠেছে হাতিয়ার যা তাকে সুযোগ দিচ্ছে সাংবিধানিক পদ্ধতিরও তোয়াক্কা না করে ঘুরপথে যেকোনো দমনমূলক আইন পাশ করানোর- ‘শ্রম কোড’ থেকে শুরু করে ‘জাতীয় শিক্ষা নীতি’-একাধিক উদাহরণ আমাদের চোখের সামনেই রয়েছে। কিন্তু সত্যি কি জনস্বাস্থ্য নিয়ে শাসকরা এতটাই চিন্তিত? দেশের জনমানুষের সার্বিক স্বাস্থ্যের ছবিটা কিন্তু অত্যন্ত হতাশাজনক।
আমাদের দেশের চিকিৎসা-ব্যবস্থা মুনাফা-ভিত্তিক, একচেটিয়া কর্পোরেটদের লুঠের মৃগয়াক্ষেত্র। সরকারী হাসপাতালগুলোকে ধীরে ধীরে রুগ্ন করে দেওয়া এবং বেসরকারী নার্সিং হোম আর ডায়াগ্নস্টিকের রমরমা ব্যবসা চালানোর মাধ্যমে মানুষের পকেট কাটা ন্যায্যতা প্রাপ্ত হয়েছে। আর ডাক্তাররাও এই ব্যবসা চক্রের অঙ্গ হয়ে ওঠেন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই। ২০১৪ সালের তথ্য অনুযায়ী স্বাস্থ্যক্ষেত্রে মোট ৯২ বিলিয়ন ডলারের মোট প্রায় ৬২% গেছে রোগীর পকেট থেকে। এদিকে সরকারের স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ দিন দিন কমছে। এ বছরের বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ জিডিপির ২.২% থেকে কমে হয়েছে জিডিপির ১.৯%; যা আসলে দেশের সমগ্র বাজেটের ০.৫%।
জনগণকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা দেবার নাম করে একটি বুজরুকি আমদানী করেছে কেন্দ্র ও রাজ্যের সরকারগুলো- যার নাম স্বাস্থ্যবীমা। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আয়ুস্মান ভারত প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেন। পোষাকি 'মোদিকেয়ার' নামের বাৎসরিক ৫ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যবীমা প্রকল্পে ১০ কোটি পরিবারকে আওতাভুক্ত করা হবে বলা হয়। বাৎসরিক খরচ হবে প্রায় ১২০০০ কোটি। কেন্দ্রের মতো রাজ্য সরকারও এনেছে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প। দুটো বীমাই জনগনকে বিনামূল্যে পরিষেবা দেবার নাম করে কার্যত বীমা কোম্পানির পকেট ভরে। এজাতীয় স্বাস্থ্যবীমা প্রাথমিক ও আউডডোর পরিষেবায় কার্যকরী নয়। এই বিমা ভিত্তিক স্বাস্থ্যকাঠামো স্বাস্থ্যের অধিকারের নাম করে গোটা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে স্বাস্থ্য পরিচয়পত্র বা হেলথ আই ডি মধ্যে বেঁধে ফেলে মানুষকে একধরনের স্বাস্থ্য নজরদারী দিকে ঠেলে দেওয়ার রাস্তা পরিস্কার করছে। মানুষের স্বাস্থ্যের অধিকারের স্লোগান 'সকলের জন্য স্বাস্থ্য' আজ হয়ে দাঁড়িয়েছে বীমা কোম্পানির বিজ্ঞাপনের ট্যাগলাইন। কিন্তু মানুষের স্বাস্থ্যের অধিকার সুরক্ষিত হচ্ছে কি?
আমাদের অঙ্গীকার হোক স্বাস্থ্যব্যবস্থার বেসরকারীকরণ প্রতিহত করা, পরিকাঠামো ও ব্যয়বৃদ্ধিতে জোর দেওয়া। জনস্বাস্থ্যের ৯০% দাঁড়িয়ে থাকে রোগ প্রতিরোধ, পুষ্টিকর খাবার, পানীয় জল, বসবাসের এবং কর্মস্থলের পরিবেশ ইত্যাদির ওপর। খাদ্যের অধিকার সুরক্ষিত করার বিষয়টা জনস্বাস্থ্যের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। স্বাস্থ্য ভিক্ষা নয়, জনতার অধিকার। পুঁজিপতিদের দালাল সরকারের স্বার্থ স্পষ্টতই জনতার স্বার্থের বিপরীত। তাই বীমা কোম্পানির বরাত দেওয়া বেসরকারী হাসপাতালের উপর নির্ভরতা নয়, বিনামূল্য ও সঠিক মানের সরকারী স্বাস্থ্যপরিষেবা হয়ে উঠুক আগামীর স্বাস্থ্য আন্দোলনের দাবী। আমরা চিকিৎসাবিজ্ঞান ও সংশ্লিষ্ট অপরাপর বিদ্যাচর্চার ক্ষেত্রগুলির সংহতিকরণ, অবহেলিত ও প্রায় নিশ্চিহ্ন প্রাচ্য বিদ্যাশৃংখলার সাথে আধুনিক চিকিৎসা শাস্ত্রকে সংহত করতে চাই। এরই পাশাপাশি, রাষ্ট্রীয়, আধা-রাষ্ট্রীয়, ও বিরাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলির দ্বারা পরিপোষিত ভুয়ো ও অবৈজ্ঞানিক চিকিৎসা পদ্ধতি ও তার মাধ্যমে অনৈতিক উপায়ে রোগীদের অর্থ ছিনিয়ে নেওয়ার অপকৌশলের বিরোধিতা করাও আমাদের কাজ। জনমানুষের স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব আছে এমন যে কোনও বিষয়ে গবেষনাকে আমরা উৎসাহ প্রদান করবো। জনমানুষের প্রয়োজনে এই ধরণের সমস্ত গবেষণালব্ধ তথ্য আমরা প্রকাশ করবো মুদ্রন মাধ্যম বা বৈদ্যুতিন মাধ্যমে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান ইত্যাদি জীবন যাপনের কোনও মৌলিক ক্ষেত্রে বৃহৎ পুঁজির একচেটিয়া আধিপত্য চলবে না। সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত অনুসারে আমাদের সংগঠনের মতামত ও কর্মধারাগত বিশিষ্টতা অক্ষুণ্ন রেখে ভাতৃপ্রতিম যেকোন সংগঠনের সঙ্গে আমরা যৌথভাবে সাধারণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করব।
আমাদের দাবীঃ-
১। সকলের জন্য সুষম আহার সুরক্ষিত করতে হবে সরকারকে। খাদ্যের অধিকার, সুস্থ্য পরিবেশে বাঁচার অধিকার জনস্বাস্থ্যের প্রাথমিক দাবী।
২। জনস্বাস্থ্য মানে শুধু চিকিৎসা প্রদান নয়, এর একটি সার্বিক দিক আছে- রোগ প্রতিরোধ মূলক স্বাস্থ্যের দিকটিতে জোর দিতে হবে।
৩। স্বাস্থ্য খাতে বাজেট বরাদ্দ বাড়াতে হবে। জনস্বাস্থ্য জনগনের সামগ্রিক স্বাস্থ্য। এ কোনও একটি বিশেষ ব্যাধীচর্চার বিষয় না। সকলের জন্য স্বাস্থ্য এই অঙ্গীকার থেকে পিছু হটা চলবে না। স্বাস্থ্যক্ষেত্রের সরকারী দায় দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলে বেসরকারী ফার্মা হাঙরদের হাতে তুলে দেওয়া চলবে না। সরকারী হাসপাতালে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে হবে। রোগী পিছু ডাক্তারের সংখ্যা বাড়াতে হবে প্রাইমারী হেলথ সেন্টার থেকে শুরু করে, জেলা, মহকুমা এবং সদর স্তরের হাসপাতালে।
৪। কোভিডের সময়ে যক্ষা, ক্যানসার সহ অন্যান্য রোগের চিকিৎসা না পেয়ে কত মানুষ মারা গেল তার হিসেব দিক সরকার। কোভিডের অজুহাতে মানুষের স্বাস্থ্যের অধিকার কেড়ে নেওয়ার এই চক্রান্ত বন্ধ করতে হবে।
৫। দুবছর স্কুল-কলেজ বন্ধ রেখে অনলাইন শিক্ষার প্রহসনে শিশুদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করার খেলা আর চলবে না। আতঙ্ক তৈরি করে বারে বারে স্কুল বন্ধ করার চেষ্টা রুখে দিতে হবে। ইতিমধ্যে নানা মহলে এমন আলোচনা শোনা যাচ্ছে যে রাজ্যে নাকি ৮০০০ স্কুল বন্ধ হতে চলেছে। যদি তাই হয় তাহলে এর পরিণতি মারাত্মক। স্কুলে কোনও অজুহাতে না জানিয়ে জোর করে অপরীক্ষিত ভ্যাকসিন দেওয়া চলবে না। এ বছরের বাজেটে মিড ডে মিলের বরাদ্দ ভয়ংকরভাবে কমানো হয়েছে। অথচ পরিসংখ্যান বলছে মিড ডে মিল খেয়ে যে প্রজন্ম বড় হয়েছে ত ারা যখন মা হচ্ছে তাদের বাচ্চাদের মধ্যে স্বাভাবিক শারীরিক বিকাশ ও বৃদ্ধির হার অনেক বেশী। ফলে পুষ্টিকর খাবার মিড ডে মিলে সারাবছর দিতে হবে। মিড ডে মিল খাতে বাজেট বরাদ্দ বাড়াতে হবে।
৬। ডি এম অ্যাক্টের জুলুমবাজি দিয়ে গণতান্ত্রিক পরিসরকে হত্যা করার চক্রান্ত রুখে দিতে হবে।
৭। হু মহামারী চুক্তিতে সই করা চলবে না। জনস্বাস্থ্য বিলের মতো দানবীয় আইন এনে জনস্বাস্থ্যকে কাজে লাগিয়ে অঘোষিত জরুরি ব্যবস্থা জারী করা চলবে না। এই ধরণের আইনের সুযোগে স্বাস্থ্য নজরদারী এবং সেই সঙ্গে সাধারণভাবেও নাগরিকদের ওপর নজরদারী চলবে না।
৮। করোনার অজুহাতে সরকারি এবং বেসরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা দিনের পর দিন বন্ধ রাখা চলবে না। বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু মানুষ মেনে নেবে না।
৯। লকডাউন তুলে নেওয়ার এবং জীবিকার শর্ত হিসেবে আমাদের শরীরে ঢোকানো হয়েছে জিন-পরিবর্তিত প্রযুক্তিতে তৈরী অপরীক্ষিত টিকা। অপরীক্ষিত এই টিকাকে বকলমে বাধ্যতামূলক করা চলবে না।
১০। পাড়ার বাজার বন্ধ রেখে অনলাইনে বেচা-কেনা চললে কার লাভ তা আমরা সবাই জানি। লকডাউন জাতীয় কোনও বিধিনিষেধ চাপানোর প্রক্রিয়া চলবে না।
১১। সকলের জন্য স্বাস্থ্য-কে সুরক্ষিত করতে হবে, স্বাস্থ্যবীমা কোনও বিকল্প নয়। এজাতীয় স্বাস্থ্যবীমা প্রাথমিক ও আউডডোর পরিষেবায় কার্যকরী নয়।প্রসঙ্গত,সারা ভারতে চিকিৎসা পরিষেবার পিছনে জনতা যা খরচ করেন, তার প্রায় ৬৬ শতাংশ ব্যয় হয় আউটডোর চিকিৎসা ও ওষুধপত্র কিনতে,যা এরূপ চটকদারী স্বাস্থ্যবিমা প্রকল্প মোটেও কভার করেনা! ফলস্বরূপ সামান্য কিছু জটিল রোগের চিকিৎসায় কেবল মাত্র বীমা প্রযোজ্য। খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের স্বাভাবিক প্রবণতা থাকে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এড়িয়ে যাওয়া, কারণ তাতে কর্মক্ষেত্রে দৈনন্দিন মজুরির রাস্তা বন্ধ হয়। এদিকে বছরের শেষে প্রায় পুরো পাঁচলক্ষ টাকাই যায় বীমা কোম্পানিগুলির পকেটে। ফলে বিমা নির্ভর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নয়, সকলের জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষিত করতে হবে সরকারী স্বাস্থ্য কাঠামোতে।
১২। জনতার মধ্যে হৃদরোগ ও টিকার নানান পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যখন লাগামছাড়া মাত্রায় পৌঁছেছে, আদালতে প্রশ্ন উঠেছে সরকারের ভূমিকা নিয়ে। এর দায় ঝেড়ে ফেলতে পারে না সরকার। ভ্যাক্সিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় প্রতিটা মৃত্যুর জন্য জবাব চাইছি সরকারের কাছে।
১৩। সমস্ত টিকার ক্লিনিকাল ট্রায়ালের সম্পূর্ণ তথ্য প্রকাশ করতে হবে, টিকার কার্য্যকারীতা এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার তথ্য সরবরাহ করতে হবে। ২০২০র ২৪শে মার্চ দেশ জুড়ে লকডাউন ঘোষণা করে কোটি কোটি ভারতবাসীর সাথে সরকার যে প্রতারণা করেছিল তার পুনরাবৃত্তি আজ আমাদের রুখে দিতে হবে।
তারিখ – ১৬।০৪।২০২৩
স্থান: মালঞ্চ হাই স্কুল, মালঞ্চ রেল গেট, হালিশহর
যে রাজনৈতিক দলগুলো বিধানসভা বা লোকসভায় যাওয়ার জন্য ভোটে লড়বে তাদের কাছে আমাদের দাবী যে এই দাবীগুলো তুলুন। এই দাবীগুলো বাস্তবায়নের পক্ষে ব্যবস্থা নিন।