Youtube এ ভিডিও টি দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন

'নাগরিকের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রের দায়িত্ব অস্বীকার করার পরিস্থিতিটা তৈরি হয়েছে, মানুষের প্রতিরোধ আন্দোলনের অনুপস্থিতির সুযোগে। এটা হঠাৎ করে আজকে, বা কোভিড-এর কারণে শুরু হয়েছে এরকম নয়। শুরুটা অনেক আগেই হয়েছিল। শিক্ষাপদ্ধতি এবং বিষয়বস্তুর এই পরিবর্তনটা হওয়ারই ছিল। কোভিড পরিস্থিতি একটা যুক্তিগ্রাহ্যতা দিয়েছে মাত্র। কোভিড অতিমারি সম্পর্কে যে প্রায় একটা সর্বজনগ্রাহ্য ভয় তৈরি করা গেছে, সেটার কারণে, জনগণের একটা বড় অংশ, যাঁরা শিক্ষার অর্জিত অধিকার হরণের প্রতিবাদ করাতে পারতেন, তাঁদেরকেও ভাবানো গেছে এছাড়া আর কিছু করার ছিল না।ফলস্বরূপ শাসকেরা প্রায় নিরুপদ্রবে, নির্বিঘ্নে শিক্ষাক্ষেত্রের এই পরিবর্তনটা ঘটিয়ে ফেলার সুযোগ পেয়েছেন।'

এমনটাই ভাবছেন, অধ্যাপক শুভেন্দু দাশগুপ্ত।

দীর্ঘ অপেক্ষার পরে, ১৬ নভেম্বর, ২০২১, মঙ্গলবার থেকে আবার স্কুলের পঠন-পাঠন প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। এর মধ্যে লকডাউনের কারণে শিক্ষার সুযোগ হারিয়ে, অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী সস্তা শ্রমের বাজারে  জড়ো হয়েছেন। শুধুমাত্র দুবেলা খাওয়ার সংস্থান নিশ্চিত করতে অসংখ্য নাবালিকার বিয়ে হয়েছে। নারী পাচার বেড়েছে। ভ্যাকসিন-কে অলিখিত ভাবে লকডাউনের অচলাবস্থা থেকে পরিত্রাণের শর্ত করে তোলা হয়েছে।

টিকার দুটি ডোজ, তারপরে ষান্মাসিক বুস্টার ডোজ, ভবিষ্যতে এটা সাপ্তাহিক বা দৈনিক হতে পারে কিনা সেসম্পর্কে কোন পরিষ্কার ধারণা কোথাও আছে বলে মনে হচ্ছে না। এরপরে নাকে-মুখে কাপড় এঁটে দুই গজের ছোঁয়াচ বাঁচিয়ে চলার বাধ্যবাধকতায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চেনা বন্দোবস্তে স্থান সংকুলান কি আদৌ সম্ভব? একঘরে চল্লিশ জনের একটা সেকশন - এটা যদি আর সম্ভব না হয়, তাহলে স্কুল বাড়িগুলোতে স্থানসংকুলান বাড়াতে হবে, হয় সময় বাড়িয়ে, না হয় জায়গা বাড়িয়ে। সেটা যদি সম্ভবও হয়, তাহলে কয়েকগুণ বেশি শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে। এই সম্ভাবনাগুলো সম্পর্কে সরকার বা কোন প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ যত্ন নিয়ে চিন্তাভাবনা করছেন, এরকম কোন ভরসা করার কোন কারণ এখনও কেউ পাচ্ছেন কিনা, জানা নেই। এর মধ্যেই শিক্ষাদান পদ্ধতি এবং শিক্ষার বিষয়বস্তু সংক্রান্ত যে বোঝাপড়াটা চালু ছিল, সেটার প্রায় খোল নলচে পর্যন্ত পাল্টে ফেলার তোড়জোড় শুরু হয়েছে।

জনস্বাস্থ্য বিষয়ক কথোপকথন, ডায়ালগস অন পাবলিক হেল্থ-এর এই পর্বে আমরা কথা বলেছি, অধ্যাপক শুভেন্দু দাশগুপ্ত-র সঙ্গে। দীর্ঘদিন শিক্ষা ও শিক্ষক আন্দোলনে যুক্ত থাকার সঙ্গে অধ্যাপক দাশগুপ্ত গবেষণা করেছেন শিক্ষাদান পদ্ধতি ও শিক্ষার বিষয়বস্ত নিয়ে।

অধ্যাপক দাশগুপ্তর মতে, 'শিক্ষাক্ষেত্রের এই পরিবর্তন হওয়ারই ছিল। কোভিড পরিস্থিতি, এই পরিবর্তন-কে যৌক্তিকতা দিতে সাহায্য করেছে মাত্র। কোভিড পরিস্থিতির ভয়াবহতা সম্পর্কে বিশ্বাস তৈরি করাটা যত সফল হয়েছে, তত এই যুক্তির গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে।'