গতকাল ২৭শে সেপ্টেম্বর WBJDF এর ডাকা গণ কনভেনশনে তিলোত্তমা আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে জনস্বাস্থ্য মোর্চা উপস্থিত ছিল। আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের নেতৃত্বের হাতে আমরা আমাদের বক্তব্য লিখিত আকারে পৌঁছে দিয়েছি। আমাদের লেখা খোলা চিঠিটি এই পোস্টের সঙ্গে দেওয়া রয়েছে।
আন্দোলনের ৫০ দিন পার করে আমরা দেখছি রাজ্য বা কেন্দ্র কোন প্রশাসনের থেকেই সুবিচার সহজলভ্য নয়। তিলোত্তমার জন্য সুবিচার ছিনিয়ে আনতে, সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার অরাজকতার সমাপ্তি ঘটাতে আমাদের আজ এক বৃহত্তর জনস্বাস্থ্য আন্দোলনের ডাক দিতে হবে। চিকিৎসক, স্বাস্থ্য কর্মী ও আপামর জনগণকে সংঘবদ্ধ হয়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার আমূল সংস্কারের দাবিগুলো জোরদার করতে হবে। তবেই প্রতিটি প্রান্তিক রোগী বিনামূল্যে যুক্তিপূর্ণ স্বাস্থ্য পরিষেবা পেতে পারেন। একমাত্র সেদিন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বা হাসপাতালে ডাক্তার, চিকিৎসক বা রোগী ও তাঁর পরিবার সুরক্ষা পাবেন। সেই লক্ষ্যে আমাদের সকলের এই তিলোত্তমা আন্দোলন জারি থাকবে।
তিলোত্তমার জাস্টিসের দাবি আজ এক বৃহত্তর আন্দোলনের রূপ নিয়েছে। এই স্বতঃস্ফূর্ত জনজাগরণকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া আজ সময়ের দাবি।
"এই মেয়ে শোন এই রাত এই ভোর
যতখানি পুরুষের ততখানি তোর"
ফারজানা ওয়াহিদ শাওনের এই গান আজ কত না মানুষের মুখে মুখে ফিরছে।নারী,পুরুষ,শিশু, কিশোর,বাচ্চা-কোলে মা,লাঠি-হাতে বৃদ্ধা,ছোট দোকানদার,বড় অফিসার,---সকলেই গলা মেলাচ্ছে এই গানে।বয়স-পেশা-লিঙ্গ নির্বিশেষে।না,শুধু গানেই গলা মেলাচ্ছে না।পথে নামছে মানুষ।পথে নেমেছে।নেমেই চলেছে।বিরামহীন,যতিচিহ্নহীন।শুধু পাকা রাস্তাতেই নামছে না।নামছে মেঠো পথে।নামছে মহানগরে,মফস্বলে,গাঁ-গঞ্জে।জনস্রোত স্লোগানে সোচ্চার:বিচার চাই, বিচার।চাই বিচার। WE WANT JUSTICE।
মহামারীর আতঙ্ক যেন শেষ হয়েও হচ্ছে না। বার্ড ফ্লু, মাঙ্কিপক্স, এমনকি করোনাও মাঝেমধ্যেই চোখ রাঙাচ্ছে। ডেঙ্গুর মতো চেনা রোগেও বহু মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। দেশের আইনগত কাঠামোতে জনস্বাস্থ্য সম্পর্কিত প্রশ্নে নানা রদবদল দেখা যাচ্ছে। করোনা মাহামারী আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে আমাদের দেশে জনস্বাস্থ্যের বেহাল দশা। ইলেক্টরাল বন্ডের তথ্য বলছে যে শাসক দল বিভিন্ন ফার্মা কোম্পানিদের থেকে বিস্তর টাকা পয়সা ঘুষ নিয়ে অপ্রয়োজনীয়, অপরীক্ষিত বা নিম্ন মানের ওষুধ এবং প্রতিষেধক বাজারে আনার ছাড়পত্র দিয়েছে। আমাদের সামনে উন্মোচিত হচ্ছে স্বাস্থ্য দুর্নীতির আরো নানান দিক। বিগত চার বছরে জনস্বাস্থ্যের এই উলট পুরান নিয়ে আলোচনা করেছেন পৌলমী।
আমরা এর আগে জিএমও নিয়ে আলোচনা করার সময় পাঠকের সামনে কিছু তথ্য তুলে ধরেছিলাম আর রেখেছিলাম কিছু প্রশ্ন। সমাপ্তিতে ইঙ্গিত রেখেছিলাম কারা, ঠিক কি কারণে জিএমও নিয়ে আসতে চেয়েছিল এবং এখনও চাইছে। এবারের বিষয় ল্যাব মিট বা পরীক্ষাগারে তৈরী মাংস।
গত দুই বছর যাবৎ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তোড়জোড় চালাচ্ছে তার সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে মহামারীর অজুহাতে চুক্তিবদ্ধ করতে। জনস্বাস্থ্যের দোহাই দিলেও এই চুক্তি আদতে মানুষকে সংক্রামক রোগের ভয় দেখিয়ে হরেক রকম বিধি নিষেধের আওতায় বেঁধে ফেলার এক আইনি ফিকির। সরকারের One Health Policy নীতিগত অবস্থানে খাদ্য, পরিবেশ ও স্বাস্থ্য পরিষেবাকে জনস্বাস্থ্যের পরিধি হিসেবে নির্দিষ্ট করেছে। অথচ সরকারি স্বাস্থ্য বাজেট বরাদ্দ হয় মূলত স্বাস্থ্য বীমা এবং সংক্রামক রোগের চিকিৎসা এবং প্রতিষেধকের খাতে। এমত অবস্থায় আমরা, জনস্বাস্থ্য মোর্চা, মনে করছি যে প্যান্ডেমিক চুক্তি ও IHR 2005 সংশোধনীগুলি জনস্বাস্থ্যের সার্বিক পরিসরকে আরও সঙ্কুচিত করবে। দেশবাসীর সার্বিক পুষ্টি, অসংক্রামক রোগের চিকিৎসা, বিনামূল্যে সরকারি আউটডোর স্বাস্থ্য পরিষেবা, ওষুধের দাম ও মান নির্ণয়, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত স্বাধীন গবেষণার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি অবহেলিত থেকে যাবে আরও বেশি।
সম্প্রতি কোভিশিল্ডের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার বিষয়ে যে সব তথ্য আমাদের সামনে এসেছে সেবিষয়ে আমাদের মতামত এবং আমাদের কিছু প্রশ্ন যার উত্তর আমরা আজও পাইনি ...
পাতা 1 এর 3